কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করবেন? ফ্রিল্যান্সিংয়ের সম্পূর্ণ গাইডলাইন - টেকনিক্যাল বিডি

ফ্রিল্যান্সিং গাইডলাইন
ফ্রিল্যান্সিং গাইডলাইন

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করবেন? ফ্রিল্যান্সিংয়ের সম্পূর্ণ গাইডলাইন।


বর্তমান সময়ে Job বাজারের বেশ নাজুক অবস্থা। এখান আমাদের বাংলাদেশের প্রায় ৪৫% এর বেশি Educated জনগোষ্ঠী বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কারণ আমাদের বাংলাদেশে পর্যাপ্ত চাকরির source তৈরি করতে পারছে না। আর তাই চাকরির পরিবর্তে বিকল্প পেশা হিসেবে সম্মানজনক অবস্থায় রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্তপেশা। বর্তমান সময়ে অনেক গুলো অনলাইন কাজের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে একটি সর্বোচ্চ popular পেশা।

চলতি সময়ে ফ্রিল্যান্সিং খাতে বাংলাদেশ বেশ ভাল স্থানের অধিকার নিয়ে অবস্থান করছে। বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশের দক্ষ পেশাদার ফ্রিল্যান্সিারদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে শত কোটি টাকার। এখন বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সার আছে প্রায় ৫ লক্ষেরও বেশি।

তাই বেশ সম্ভাবনা রয়েছে ফ্রিল্যান্সিংয়ে। কিন্তু এই ফ্রিল্যান্সিং নিয়েও প্রচুর ভুল idea রয়েছে আর এসব ভুল idea কে পুঁজি করে গড়ে উঠেছে অসাধু ব্যবসায়ীদের হরেক রকমের প্রতারণার ফাঁদ। এসব নিয়েই আলোচনা হবে এই লেখাতে।

ফ্রিল্যান্সিং হল কোন প্রতিষ্ঠানে Permanent চুক্তিবদ্ধ না হয়ে বিভিন্ন project বেসিসে কাজ করা। মানুষ শত বছর ধরে ফ্রিল্যান্সিং করে আসছে। যেমন একজন রিক্সাওয়ালাও ফ্রিল্যান্সার, কারণ সে অন্যের রিক্সা চালায়, ইচ্ছা হলে প্যাসেঞ্জার নেয়, আর নাহলে নেয় না। তার freedom আছে। ইদানিং ফটোগ্রাফাররাও ফ্রিল্যান্সার, কারণ তারা কোথাও photographer হিসাবে চাকরি না করে বরং অনুষ্ঠান বেসিসে শুট করে আর পারিশ্রমিক নেয়।

অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং মানে হল, ক্লায়েন্ট অনলাইনের মাধ্যমে আপনাকে job দিবে, আপনি সে job গুলো করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হবেন, নিজের দক্ষতা দিয়ে job টা করবেন আর সেটা অনলাইনের মাধ্যমেই ক্লায়েন্টকে ডেলিভার করবেন। সবশেষে ক্লায়েন্ট অনলাইনের মাধ্যমেই আপনাকে payment করবে। এখানে কিন্তু আপনি অনলাইন job করেননি, কাজ আপনার দক্ষতা দিয়েই করেছেন। শুধু কাজের মাধ্যমটা হচ্ছে অনলাইন।

এখন বেশ জমজমাট একটি business হচ্ছে, আউটসোর্সিং-ফ্রিল্যান্সিং এর নামে Training প্রতারণা। বেশিরভাগ ট্রেনিং সেন্টার গুগল-YouTube বা অন্যান্যভাল মেন্টরের লেখা পড়ে মুখস্থ করে সেটা শেখানোর জন্য Training Centre খুলে বসে।

একটু চিন্তা করুণ, আপনাকে সফল হওয়ার Mentorship সে-ই দিতে পারবে, যে ঐ কাজে নিজে সফল। কিন্তু যে নিজেই কাজ করেনা বা করেনি, সে কি করে আপনাকে Training দিতে পারবে? আর যে দক্ষ, যে নিজে সফল, অনেক টাকা আয় করে, অনেক রেপুটেশন, সে কেন Training business করে ৫-১০ হাজার টাকা ইনকাম করতে আসবে? সে আরেকজনকে সফল করার মূল-মন্ত্র দিতে পারলে সে নিজে তো লক্ষ-লক্ষ আয় করার কথা। তার এত Time কোথায়?

এসব Training সেন্টারের মালিক বা ট্রেইনারদের background খোঁজ নিলে দেখবেন, তারা নিজেরা হয়তো অন্য কোনো ট্রেনিং সেন্টারে কোর্স করেছিল তারপর নিজেরা ঐ কাজে দক্ষ হতে না পারার কারণে যা শিখেছে তা অন্যকে শিখিয়ে টাকা income করছে।

আর খেয়াল করলে দেখবেন, এসব Training সেন্টারে ফ্রিল্যান্সিং বলে SEO বা এই টাইপের সহজ কিছু কাজকে বোঝানো হয়। কিন্তু একজন Expert SEO প্রফেশনাল বলতে পারবেন এই ট্রেইনিংয়ে এসইওয়ের ১০% ও শেখানো হয়না। কারণ ট্রেইনাররা Download করা কোর্স থেকে শেখায় যা কিনা কয়েক বছর আগেই আউটডেটেড। আর এই খাতে প্রতিদিন নতুন Update আসছে। আবার সম্পূর্ণ এসইওয়ের কাজ পুরো digital মার্কেটিংয়ের কাজের ৩% এর চেয়েও কম। তার মানে আরও ৯৭% job আছে, যেগুলোতে Bangladeshi মানুষ নেই বললেই চলে।

একবার ভেবে দেখুন, digital মার্কেটিংয়ের ৩% কাজে যদি ১০ হাজার চাকরি অ্যাভায়েলবল থাকে তাহলে যদি Bangali বাকি ৯৭% কাজের দিকে মনোযোগী হতো তাহলে কি পরিমাণ চাকরির ক্ষেত্র সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ থাকতো? একটা কথা মনে রাখবেন, Marketing and Advertising এর একটি শাখা হচ্ছে Digital marketing এবং অন্যটি হচ্ছে অফলাইন বা ফিজিক্যাল মার্কেটিং। আর digital মার্কেটিংয়ের মাত্র এক শতাংশ হচ্ছে এসইও। তাহলে বুঝতেই পারছেন শুধুমাত্র digital marketing সেক্টরেই কি পরিমাণ চাকরি তৈরি করা সম্ভব।

ফ্রিল্যান্সিং কিন্তু সহজ কাজ নয়। একজন success ফ্রিল্যান্সারের আয়ও কিন্তু কম নয়। একজন success ফ্রিল্যান্সারের Success হওয়ার পেছনের story শুনলে আপনি তাকে ‘লেজেন্ড’ খেতাব দিবেন। কারণ সফলতার পেছনের story আনন্দের হয়না, অনেক স্ট্রাগল থাকে। রাতের পর রাত কোন কাজ শেখা, YouTube টিউটোরিয়াল দেখা, বিভিন্ন ব্লগের পোস্ট পড়া, কাজ গুলো Practice করা, ধৈর্য ধরে টাকার আশা না করে কাজে skill হওয়ার জন্য মাসের পর মাস সময় দেয়া, এসব থাকে একজনের Success Freelancer এর পেছনে।

ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কথা উঠলেই একটা উদাহরণ আমি সবসময়েই দিই। সেটা হচ্ছে, ধরুন আপনি BBA পড়ছেন। Finenesse নিয়ে। ইউনিভার্সিটি থেকে Study শেষ করতে সময় লাগে ৪ বছর। ৪ বছর Study করে আপনি একটা জবে ফ্রেশার হিসেবে Apply করেন, যার সেলারি ১৫-২০ হাজার টাকার মত। অনেকবার Reject হতে হয়, কারণ আরও শত-শত Apply করছে। শেষমেশ একটা জব পান। ১৫-২০ হাজার টাকার job করার জন্য ৪ বছর পড়াশোনা করলেন দু-বার না ভেবে। পড়াশোনা শেষ করে একটা লোকাল জবের জন্য প্রতিযোগীতায় নামলেন একই শহরের অন্যদের সাথে, যারা কিনা আপনার Level এ পড়াশোনাই করেছে।

এবার চিন্তা করুণ তো, ফ্রিল্যান্সিংয়ের কথা। American একটা কোম্পানি তাদের একটা Job Outsource করল মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে। ২ সপ্তাহের project, যার ভ্যালু ১ হাজার ডলার বা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকার কাছাকাছি। কাজটা সারা বিশ্বের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ওপেন, বিশ্বের টপ প্রফেশনালরা কাজটার জন্য Apply করল, আপনিও করলেন। তার মানে? এবার আপনার প্রতিযোগীতার Level কোথায়?

হ্যাঁ এটা সত্যি যে ফ্রিল্যান্সিং করে লাখ টাকা আয় করা যায়। Prothomalo.com এর একটা খবরে এসেছে, ২০১৮ সালে শুধুমাত্র সিলেট থেকেই ফ্রিল্যান্সাররা বৈদিশিক মুদ্রা নিয়ে এসেছেন প্রায় ৮০ লক্ষের কাছাকাছি। কিন্তু তারা ২ মাসে কোর্স করে এত দূর আসেনি। তারা অন্তত এক বছর সময় নিয়ে টাকা আয়ের কথা না ভেবে Study এর উপর জোর দিয়েছিল!

ফ্রিল্যান্সিং মূলত কাদের জন্য?


যাদের অতিরিক্ত লোভ নেই।
যারা কাজ শেখার ধৈর্য রাখে।
যারা International পর্যায়ে Job করার মত কমিউনিকেশন জানে।
যারা শর্টকাটে টাকা income করতে চায় না।
যাদের Life এ কিছু করার প্রবল ইচ্ছে আছে।
যাদের শেখার Trend আছে।

ফ্রিল্যান্সিং কাদের জন্য নয়?


যারা কাজের চেয়ে টাকাকে assessment করেন।
যারা সহজে income এর পথ খুঁজছেন।
যারা চাকরির বা অন্য পেশার পাশাপাশি সাইড income হিসেবে ফ্রিল্যান্সিংকে ভাবছেন।
যারা মনে করছেন শেখা শুরুর ১৫ দিন – ১ মাসের মধ্যেই কাড়িকাড়ি টাকা income করবেন।
যারা Freelancing Training সেন্টারের চটকদার বিজ্ঞাপন ‘ঘরে বসে লাখ টাকা’ দেখে এই পেশার জন্য Interested হয়েছন।
যারা ফ্রিল্যান্সিং কে খুব Eazy ভাবেন।


আপনিও কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন? কীভাবে এই ফ্রিল্যান্সিং পথে আসবেন?


প্রথমে জানতে হবে, এই খাতে কোন কোন Field রয়েছে। নিচে বিভিন্ন marketplace এ কাজ করার সবগুলো Field দেয়া আছে। সেগুলো দেখুন।
তারপর চিন্তা করে দেখুন আপনার এখন যে background, skills এবং ইন্টারেস্ট; সেটার সাথে কোন field মিলে যায়।
বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে ঐ field গুলোর এখন post করা জব গুলো ঘেঁটে দেখুন, বুঝার চেষ্টা করুন এ ধরণের কাজে কি কি skills লাগে।
এবার Try করুন কোথা থেকে শেখা যায়। মনে রাখবেন, ফ্রিল্যান্সিং কিন্তু অনলাইনেই শেখা যায় যদি আপনার ধৈর্য থাকে। এদেশে প্রথম সারির ফ্রিল্যান্সাররা নিজে নিজেই শিখে success.
তবে একা একা সম্পূর্ণ skill হওয়া সম্ভব নয় আর তাই আপনাকে কারো না কারো পরামর্শ গ্রহণ করতেই হবে।
চেষ্টা করতে থাকেন, failed করলে ভুল গুলো শুধরে আবার Try করেন। যে কাজে আপনাকে এক্সেপ্ট করেনি, সে কাজ নিজেই করুন, সেম্পল project হিসেবে practice হবে, পোর্টফোলিও হবে।
ধৈর্য ধরে নিজেকে আরও skill বানানোর জন্যে নতুন নতুন কিছু study করুন।


ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য সবচেয়ে বড় যে গুণটা দরকার, তা হল নিজ থেকে বুঝে নেয়ার ক্ষমতা, কাউকে question করার আগে নিজে সময় দিয়ে মাথা খাটিয়ে নেট ঘেঁটে শিখে নেয়ার try করুন। কারণ যে আপনাকে পরামর্শ দিতে পারবে, অবশ্যই সে নিজে অনেক ব্যস্ত, তাকে ছোট খাটো সব বিষয়ে question করে তাকে বিরক্ত করা ছাড়া কোন কাজই হবেনা।

আমি নিজে এই কয়েকশ’ শব্দ লিখার পূর্বে নেট ঘেটেছি। নিজের Reality এর সাথে মিল রেখে লিখার Try করেছি। এখানে অনেক কিছুই রয়েছে যা আমি অন্যান্য লেখকের থেকে নিয়ে এসেছি। কারণ আমরা শুরুতেই Google বা Yahoo তে যেটা Search করি সেটা হচ্ছে ‘বাংলা টিউটোরিয়াল’। আমাদের ইংরেজিতে এখন অনেক problem .  কিছু ফেসবুক গ্রুপ কিংবা ট্রেইনিং সেন্টার থেকে ইংরেজি শেখার ফলাফল হচ্ছে এটা। যেখানে English language আপনাকে মুখস্থ করিয়ে দেয়া হয়। কয়েকটা বই পড়ে যদি সত্যিকার অর্থেই ইংরেজি শেখা যেতো তাহলে এদেশে Bangla এর চেয়ে English আরও বেশি প্রচলিত হতো।

কিন্তু সেটা হয় নি। কারণ, কয়েকটা books পড়ে কিংবা Facebook গ্রুপে কয়েকটা পোস্ট পড়ে অথবা কিছু নিম্নমানের কোচিং সেন্টার থেকে ইংরেজি কোর্স করে ইংরেজি শেখা Possible নয়। একইভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রেই একই কথা বলা যায়। আমি নিজে গুগলের হাজার হাজার Page আর হাজার হাজার ব্লগের post পড়েছি। শুধুমাত্র ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য। আজকে ৫ বছর ধরে ফ্রিল্যান্সিং জগতে আছি। এখন পর্যন্ত কত টাকা income করেছি, কত ধরণের কাজ করেছি সেটা আমি নিজেও গুনে দেখার সময় পাইনি। এখন কাজ করছি বেশ কিছু idea কে বাস্তবে রুপ দেয়া নিয়ে। যেকোন ফ্রিল্যান্সারই দক্ষতার সাথে ৩-৪ বছর ফ্রিল্যান্সিং করে ঐ Field এ নিজের কোম্পানি START করতে পারেন।

আমি ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে গবেষণা করেছি, বিভিন্ন খাতে কাজ করে দেখেছি, বিভিন্ন Sector এর মানুষের সাথে চলাফেরা করেছি। আর তাই এই Guideline হিসেবে ইন্ডাস্ট্রির বেশ কিছু Field নিয়ে আলোচনা করতে পেরেছি। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আমি প্রত্যেক ফিল্ডেই অভিজ্ঞ এবং দক্ষ। সব Field নিয়ে advance লেভেলের পরামর্শ দেয়া কারও পক্ষে সম্ভব নয়, তাই এ ধরণের question বা জিজ্ঞাসা এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে job করার জন্য বিভিন্ন ধরণের কাজের প্রয়োজন হয়। এখানে আমি বেশ কিছু ফিল্ডের নাম বলবো যেগুলোতে job করে আপনি প্রায় বেশিরভাগ মার্কেটপ্লেসেই job পাবেন। ফ্রিল্যান্সিং ইন্ডাস্ট্রিতে যেসব ফিল্ডকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মধ্যে ফেলা হয় আর যেসব ফিল্ডে job করাটা Intelligent ও উপযোগী, সেগুলো হচ্ছেঃ

ডেটা এন্ট্রি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, Website Design, ট্রান্সলেশন, Software Development, এইচটিএমএল, পিএইচপি, ডিজিটাল মার্কেটিং, WordPress, আর্টিকেল রাইটিং, কপিরাইটিং, Creative Writing, এসইও, সিএসএস, Photoshop, ইলাস্ট্রেটর, সফটওয়্যার আর্কিটেকচার, Microsoft office, অ্যান্ড্রয়েড, অ্যাংগুলার জেএস, জাভাস্ক্রিপ্ট, বুক কিপারস, সি শার্প ডেভেলপমেন্ট, কাস্টোমার সার্ভিস রিপ্রেজেন্টেটিভস, Email Marketing, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, আইওএস ডেভেলপমেন্ট, অবজেকটিভ সি ডেভেলপমেন্ট, Python, সুইফট, ইউ আই, ইউ এক্স, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি।

যাদের কোনো কিছু বুঝতে Problem রয়েছে বা যারা কোনো মন্তব্য করতে চান তারা নিচের থেকে Comment Box এ তা জানাতে পারেন।